প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের মারধরের অভিযোগ পুলিশ ও দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে
উপস্থিত অন্য সাংবাদিকরা প্রতিবাদ করলে পুলিশ কিছুটা পিছু হটে

তাজা খবর: রাজধানীর তোপখানা সড়কে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একদল অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত ও পুলিশ সদস্যদের হামলায় তিন সাংবাদিক ও এক কনটেন্ট ক্রিয়েটর আহত হয়েছেন। বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুরের দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের গেটের পাশে থাকা পুলিশ বক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, নিউনেশন পত্রিকার সাংবাদিক শিমুল পারভেজ ও নোমান মোশারফ, বাংলাভিশনের কেফায়েত শাকিল এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটর আলম শরীফ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় জাতীয় প্রেসক্লাবের গেটের সামনে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা ঘটনাটি দেখেও কোনও হস্তক্ষেপ করেননি। বরং কিছুসময় পর পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের না থামিয়ে উল্টো আহত সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়।
আহত শিমুল পারভেজ জানান, মাইক্রোবাস চালক তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে। এরপর ভেতরে যাত্রীরা নেমেও আরেকদফা মারে। কিন্তু সেই দৃশ্য পুলিশ কাছ থেকে দেখলেও সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। এসে উল্টো আমাদের মারধর করেছে। পরিচয় দেওয়ার পরও তারা দফায় দফায় পুলিশ বক্সে নিয়ে মেরেছে। যা অন্যায় ও ইচ্ছাকৃত বলে আমি মনে করি।
আহত কেফায়েত শাকিল জানান, শিমুল পারভেজ ও নোমান প্রেসক্লাব থেকে মোটরসাইকেলে বের হচ্ছিলেন। এ সময় একটি প্রাইভেটকার হালকা ধাক্কা দেয়। তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে শিমুল পারভেজকে এক ব্যক্তি ছুরি দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করেন। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়।
তিনি বলেন, আমি রাস্তার অন্য পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। ঝামেলা শুনে গাড়ির জানালা দিয়ে দেখছি, শিমুল ভাইকে পুলিশ বক্সের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমি দৌড়ে এগিয়ে যাই, কিন্তু তখন শিমুলকে খুঁজে পাইনি। পরে বক্সের ভেতরে আরও একজনকে মারধর হতে দেখেছি। তখনই মোবাইল বের করে ভিডিও ধারণ করার চেষ্টা করি। কিন্তু মোবাইল দেখার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ আমার ওপর চড়াও হয়।
তিনি আরও বলেন, ৫ থেকে ৬ জন পুলিশ আমাকে ধরে বক্সের ভেতরে টেনে আনে। তারা মোবাইল নিতে চেয়েছে, ভিডিও ডিলিট করতে বলেছে। আমি বারবার বলেছি, আমি টিভি সাংবাদিক, ভিডিও ধারণ আমার কাজ। তারপরও আমাকে মারধর করা হয়। এসময় আলম নামে একজন মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিককেও পুলিশ মারধরের চেষ্টা করে। পরে উপস্থিত অন্য সাংবাদিকরা প্রতিবাদ করলে পুলিশ কিছুটা পিছু হটে।
সাংবাদিক ইয়াসির তন্ময় জানান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সড়ক ধরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিকে যাওয়ার সময় একটি মাইক্রোবাস সাংবাদিকদের মোটরসাইকেলের সামনে দাঁড়ায়। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা শিমুল পারভেজ সেই মাইক্রোবাস চালককে গাড়িটা একটু পিছিয়ে নিতে বলেন। কিন্তু গাড়ি না সরিয়ে উল্টো তার গাড়ির ভেতর চালক ও যাত্রীরা তাদের গালাগালি করতে থাকেন। একপর্যায়ে মাইক্রোবাসের চালক গাড়ি থেকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে শিমুলকে আঘাত করার চেষ্টা করলে হাতে আঘাত লাগে এবং রক্তাক্ত হয়। পরে চালক ও প্রাইভেটকারে থাকা ব্যক্তিরা নেমে এসে তাদের বেধড়ক মারধর করতে থাকেন। এ সময় জয়নাল নামের এক পুলিশ সদস্যের নেতৃত্বে অন্য পুলিশ সদস্যরা ছুটে যান। তারা ছত্রভঙ্গ করে দেন। পরে তারা তিন সাংবাদিকের ওপর চড়াও হন। পারভেজ, নোমান ও শাকিল সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর আরও মারধর করেন পুলিশ সদস্যরা। পরে তাদের পুলিশ বক্সে নিয়ে আরও কয়েক দফা মারধর করা হয়।