সারা বাংলা

আন্দোলন না থামলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ: স্বাস্থ্যের ডিজি

আমরা কি বিনা কারণে সরকারের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করতে চাই

তাজা খবর: স্বাস্থ্যখাত সংস্কারে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন বন্ধ না হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হস্তক্ষেপ করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর।

তিনি বলেছেন, আন্দোলনকারীরা যে তিন দফা দাবি তুলেছেন, তা যৌক্তিক হলেও বাস্তবায়নে সময় লাগবে। স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে এসব সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (শেবাচিম) পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. শেখ ছায়েদুল হক, রাজনৈতিক দলের নেতা এবং চিকিৎসক সমাজের প্রতিনিধি।

ডা. আবু জাফর বলেন, ‘আমরা কি বিনা কারণে সরকারের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করতে চাই, নাকি বিশৃঙ্খলা করে তৃতীয়পক্ষের হাতে সুযোগ তুলে দিতে চাই এ বিষয়টি ভাবতে হবে। আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তাই কোনও বিরোধ থাকার কথা নয়। তবে যদি জনদুর্ভোগ তৈরি হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

তিনি আরও জানান, হাসপাতাল সংস্কারে কিছু কাজ দ্রুত করা সম্ভব হলেও কিছু কাজ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ। পরিবর্তনের জন্য সুযোগ এবং সবার সহযোগিতা জরুরি। রোগী, চিকিৎসক, প্রশাসন সব পক্ষের সচেতনতা ছাড়া কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়।

এদিন মহাপরিচালক জরুরি বিভাগের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

অন্যদিকে, আন্দোলনকারীরা গত পাঁচদিন ধরে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের নথুল্লাবাদ এলাকায় সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার সঙ্গে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বুধবার নথুল্লাবাদের পাশাপাশি সাগরদি পয়েন্টেও অবরোধ করা হয়, যেখানে সাগরদি কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।

মতবিনিময় সভায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিক নেতারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার পরামর্শ দেন।

অপরদিকে, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি ডা. কবিরুজ্জামানসহ কিছু চিকিৎসক আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপের দাবি জানান। শেবাচিম হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে তারা কাজ বন্ধের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জেলা কমিটির আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন সোহাগ বলেন, ‘িআশ্বাস নয়, বাস্তবায়ন দৃশ্যমান না হলে আন্দোলন থেকে সরবো না।’

সংগঠক মহিউদ্দিন রনি বলেন, ‘সারাদেশের সরকারি হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা, রোগীদের হয়রানি ও স্বাস্থ্যখাতের সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরিশালে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরাসরি কথা না বলা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।’

তিন দফা দাবি উত্থাপন করেছেন,১. সারাদেশের সরকারি হাসপাতালে অবকাঠামো উন্নয়ন, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা। ২. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ হাসপাতালে দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি এবং দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। ৩. ডিজিটাল অটোমেশন ও স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক টাস্কফোর্স গঠন করা। আন্দোলনকারীরা চান, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন জনগণের ভোগান্তির বিষয় শুনে তদন্ত সাপেক্ষে নতুন সুপারিশ ও তাৎক্ষণিক বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিক।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button