শিক্ষা ও সংস্কৃতি

নগরকান্দায় ২ দিন ব্যাপী লোক কবিগানের আসর

লোকায়ত সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ কবি গান

প্রসেনজিৎ বিশ্বাস, নগরকান্দা:

বাংলা লোকায়ত সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ কবি গান। সাহিত্যকে যেমন উর্বর ও ঋদ্ধ করেছে ঠিক তেমনি সৃষ্টি করেছে সাহিত্য-সংস্কৃতিতে নতুন এক ভাবধারা। ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার ব্রাহ্মণডাঙ্গা নদীর পশ্চিম পাড়া সার্বজনীন মহাশ্মশানে দুই দিন ব্যাপী লোক কবিগান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১২) এপ্রিল সন্ধ্যায় শেষের দিনে লোক কবি সম্রাট ও সজীব সরকারের মুখে মুখে পদ রচনা করে তাৎক্ষণিকভাবে সুরারোপ করে গাওয়া হয় কবিগান। এ গানে গায়ক নিজেই গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী। এই গানের গায়ককে বলা হয় চয়ন, ব্যবহার, বোধগম্যতা ও প্রাঞ্জলতাকে ধরে রাখতে হয়। এর কিছু বৈশিষ্ট্যের মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হলো- একই শব্দ একাধিকবার অল্প ব্যবধান বা ব্যবধান ছাড়াই ব্যবহার করে ধ্বনিতরঙ্গ সৃষ্টি করা। একই শব্দ বিভিন্ন অর্থে ব্যবহার করা। ছন্দভঙ্গির পরিবর্তন করা। কবিগানের মাধুর্য, সুষমা ও পরিবেশন রীতি মানুষকে আকৃষ্ট করে অনায়াসে। কবিগানের রয়েছে অনবদ্য ভাবসম্পদ, ভাষারীতি, পরিশীলিত যুক্তি ও প্রবলস্রোতা চিন্তাশক্তি। কবিয়ালদের উপস্থিত বুদ্ধি, পুরাণ সম্পর্কে জ্ঞান, আর সঙ্গীতে অসাধারণ দখল থাকে। ঢোল আর কাসি হচ্ছে কবিগানের বাজনা। এ গানের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে জনসাধারণের মনোরঞ্জন ও লোকশিক্ষা। তৎকালীন সময়ের মতো বর্তমান সমাজ জীবনে উৎসব-আনন্দের ঘনঘটায় কবিগানের আসর আয়োজিত হয়। আর এই গানের আসর বসার মাঝেই পরিলক্ষিত হয় কবিগানের সার্থকতা ও সফলতা। কবিগান সমাজে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এই গানে শ্রোতারা মন্ত্রমুগ্ধের মতো হয়ে যায়। এই কবিগান পলস্নীসমাজে খুবই জনপ্রিয় বিনোদন হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে।

মানবপ্রেম, সৌহার্দ, দেশপ্রেম, সম্প্রীতি ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাতিঘর এই কবিগান।

উল্লেখ্য ২০ শতক জমির ওপর চার মাস ব্যাপী ১৫ লক্ষ্য টাকা খরচ করে তৈরি করা হয় এই মহাশ্মশান। তবে অধিকাংশ অর্থ ব্যয় করেন কানাই বিশ্বাসের ছেলে প্রবাসী সতদল বিশ্বাস।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button