যেভাবে গুছিয়ে সবকিছু করতে চাচ্ছি, সেভাবে হচ্ছে না: শিক্ষা উপদেষ্টা
আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখনো বড় রকমের অস্থিরতা রয়েছে

তাজা খবর: শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, ‘মন্ত্রণালয়ে অনেক কিছু মোকাবিলা করতে হচ্ছে। আমরা যেভাবে গুছিয়ে সবকিছু করতে চাচ্ছি, সেভাবে করা যাচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখনো বড় রকমের অস্থিরতা রয়েছে।’
বুধবার (৩ আগস্ট) রাজধানী ইডেন মহিলা কলেজে বাংলাদেশ স্কাউটসের আয়োজনে ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান: অতীতের চেতনা, ভবিষ্যতের পথ নির্দেশ’ আলোচনা সভা এবং শহীদ স্কাউটস পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা স্মারক বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
জুলাই আন্দোলনে স্কাউটস শহীদদের স্মৃতিচারণ করে রফিকুল আবরার বলেন, ‘শহীদরা অনেক গুণী ছিলেন। বাবা-মা অনেক কষ্টে এই বাচ্চাদেরকে গড়ে তুলেছিলেন। তারা দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ। তারা ভেবেছিল, আমরা এই দেশকে মুক্ত করে ছাড়ব এবং শহীদরা হার মানেননি।’
তিনি বলেন, ‘যখন গুলি চলছিল, তখনও স্কাউটসরা প্রাণের ভয় উপেক্ষা করে মানুষের সেবা দিয়েছে। আমরা স্কাউটসদের আত্মত্যাগের কথা শুনেছি এবং দেশের যেকোনো বিপদে এগিয়ে আসে তারা।’
অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করেন সারাদেশ থেকে আসা শহীদ স্কাউটসদের পরিবারের সদস্যরা।
শহীদ মীর মুগ্ধের ভাই মীর মাহফুজুর রহমান স্নিগ্ধ বলেন, ‘আমি শহীদের পরিবারের সদস্য। যাদের পরিবারের কেউ শহীদ হয়েছেন, তারাই এ ব্যথা বুঝতে পারেন। জুলাই-আগস্টে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, শহীদদের হত্যা মামলার আসামিদের জামিন দেওয়া হচ্ছে, তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এগুলো দেখে কষ্ট হয়। আরও কষ্ট হয় যখন শহীদ পরিবারের সদস্যদের রাস্তায় লাঠিচার্জ করা হয়। আমরা শহীদদের হত্যার বিচার দেখতে চাই।’
লালমনিরহাট থেকে আসা শহীদ রাজিবুল করিমের মা মোসাম্মদ জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘আমি দেখেছি, আমার শিশুটি বাসায় এক গ্লাস পানি ঢেলে খায় না। কিন্তু স্কাউটিংয়ের সময় মানুষের সেবায় এগিয়ে যেত এবং সেবা করেছে। আমার ছেলে বলতো, আমি কোনো পুরস্কার পেলে তোমাকে অনুষ্ঠানে নিয়ে যাবো। আমার ছেলে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছিল। আমার ছেলের কথা মনে পড়লে কান্না আসে।’
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে ক্লাস ফাইভ এবং এইটে বৃত্তি পেয়েছিল। দশম শ্রেণিতে এ প্লাস পেয়েছিল। আমার ছেলে মেধাবী ছিল। এসএইচসিতে সাতটি পরীক্ষা দিয়েছিল। রেজাল্টে দেখা গেছে, এই সাত সাবজেক্টে ৯০ এর উপরে মার্ক পেয়েছিল।’
রাজধানীর ফার্মগেটে শহীদ গোলাম নাফিজের বাবা গোলাম রহমান বলেন, ‘সরকার সংস্কার আর নির্বাচন করুক। কিছু বলার নাই, আমরা চাই বিচার। বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে। আমরা কী পেয়েছি? রক্তের বিনিময়ে দেশে পরিবর্তন হয়েছে?’
তিনি বলেন, ‘কোনো অনুষ্ঠান বা দোয়ার আয়োজনের জন্য উপদেষ্টাদের কাছে গেলে বেশিরভাগ বলে সময় নাই। আমাদের কষ্ট লাগে। সবাই সবার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। আমরা আন্দোলন করে সেবার জন্য কাতরাচ্ছি। হাসপাতালে ঠিক মতো সেবা মিলছে না। শহীদ পরিবারের জন্য ফান্ড নাই।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক অধ্যাপক ড. খান মাইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. রফিকুল ইসলাম ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব রেহেনা পারভীন প্রমুখ।