৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন আজ, ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ
ভোট কেন্দ্রগুলো ঘিরে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ

তাজা খবর: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৩ বছর পর আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন। একইসঙ্গে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হল সংসদের নির্বাচনও। এদিন ভোটগ্রহণ শুরু হবে সকাল ৯টায় এবং চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এই দীর্ঘ বিরতির পর ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ভোট কেন্দ্রগুলো ঘিরে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ।
এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৯১৯ জন। কেন্দ্রীয় সংসদের পাশাপাশি হল সংসদেরও ভোট হবে একসঙ্গে। ভোটগ্রহণ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলের ২২৪টি বুথে। এর মধ্যে ১০টি ছাত্রী হল এবং ১১টি ছাত্র হল। প্রতিটি কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা, একজন পোলিং কর্মকর্তা এবং একজন সহকারী পোলিং কর্মকর্তা।
নির্বাচনে মোট ১৭৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে ১০ জন। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে ভোটাররা মোট ৪০টি ব্যালটে ভোট দেবেন।
এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে মোট ৮টি প্যানেল। ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, বাম সংগঠন, প্রগতিশীল ও স্বতন্ত্রদের সমর্থিত বিভিন্ন প্যানেল ভোটযুদ্ধে অংশ নিচ্ছে। প্রতিটি প্যানেলের প্রচার-প্রচারণায় ছিল নতুন ভাবনা ও দাবি-দাওয়ার নানা প্রতিফলন। শিক্ষার্থীদের অধিকার, নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহন ব্যবস্থা, আবাসন সংকটসহ নানান ইস্যু নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রার্থীরা।
নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ক্যাম্পাসের ১২টি গেটে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ২০০ পুলিশ সদস্য। ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তায় রয়েছে আনসার সদস্যরাও, যারা কাজ করছেন সিভিল পোশাকে। এছাড়াও ক্যাম্পাসে রাখা হয়েছে স্ট্রাইকিং ফোর্স।
ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য সিনেট হলে স্থাপন করা হয়েছে বড় পর্দা। সেখানে একসঙ্গে সব কেন্দ্রের ভোটের চিত্র দেখা যাবে। প্রতি ঘণ্টায় ভোটের অগ্রগতি ও ফলাফল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রদর্শনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ও জনসংযোগ দফতরের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে ভিডিও নির্দেশনাও।
ভোটগ্রহণ শেষে ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) মেশিনে ভোট গণনা করা হবে। এতে ফলাফল দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে প্রকাশ করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী প্রশাসন।
৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়াকে শিক্ষার্থীরা দেখছেন এক নতুন দিগন্তের সূচনা হিসেবে। অনেকের মতে, এই নির্বাচন শুধু নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি করছে না, বরং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক চর্চা এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথকেও সুগম করছে।