সারা বাংলা

তিন রেলকর্মী পেলেন সাহসিকতার স্বীকৃতি

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাহসিকতার সাথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন

তাজা খবর: বাংলাদেশ রেলওয়ের সেবা ও সুরক্ষায় আত্মনিবেদন করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাহসিকতার সাথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার স্বীকৃতিস্বরূপ তিন রেলকর্মীকে সম্মাননা প্রদান করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

সম্মাননা পাওয়া তিন রেলকর্মী হলেন— সাবেক লোকোমাস্টার (গ্রেড-১) মো. সাহাব উদ্দিন, ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহিম এবং কুমিরা রেলক্রসিংয়ের গেটম্যান নাজমুল হোসেন। এর বাইরে বেসরকারি টি.কে. গ্রুপের সিকিউরিটি গার্ড মো. দেলোয়ারকেও সম্মাননা জানানো হয়।

রেলভবনে গত ১৯ জুন সাহসিকতার স্বীকৃতি হিসেবে তাদের হাতে নগদ অর্থসহ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তার আগে তিনি রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তাদের ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

স্বীকৃতি দেওয়ার কারণ হিসেবে রেলপথ মন্ত্রণালয় জানায়, গত ১৩ এপ্রিল গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর রেলস্টেশনের কাছে মহুয়া কমিউটার ট্রেনের পাওয়ার কারে অনাকাঙ্ক্ষিত অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন অন্যান্য বগিতে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে প্রাক্তন লোকোমাস্টার সাহাব উদ্দিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জ্বলন্ত বগির কাছে গিয়ে পাওয়ার কারের সাথে বগির সংযোগস্থলের হুক খুলে দেন। তার এই অদম্য সাহসিকতা ও কর্মতৎপরতায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় ট্রেন ও ট্রেনের যাত্রীরা

গত ৪ এপ্রিল ৪ নম্বর ডাউন কর্ণফুলী কমিউটার ট্রেনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে বিপুল সংখ্যক টিকিটবিহীন যাত্রী জোরপূর্বক পাওয়ার কারে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহিম ওই পাওয়ার কারের অপারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি ওই যাত্রীদের পাওয়ার কারে উঠতে বাধা দিলে তাদের একটি অংশ তাঁকে আক্রমণ করে এবং তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন।

গত ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের কুমিরা রেলক্রসিংয়ে দায়িত্ব পালনের সময় ডাউন মালবাহী ট্রেন ৬০৪ আসার আগে নিয়মমাফিক গেট বন্ধ করে দেন গেটম্যান নাজমুল হোসেন। এ সময় একটি অটোরিকশায় রোগী আছে দাবি করে কিছু ব্যক্তি গেট খোলার অনুরোধ জানালে তিনি দ্রুত গেট খুলে দিয়ে অটোরিকশাটি পার করে দেন। এর দুই/তিন মিনিট পর ওই ব্যক্তিরা আবার গেট খোলার অনুরোধ জানায়। ট্রেন ওই গেটের কাছে থাকায় তিনি গেট খুলতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উক্ত ব্যক্তিরা গেটম্যান নাজমুল হোসেন ও সিকিউরিটি গার্ড মো. দেলোয়ারকে নৃশংসভাবে প্রহার করে আহত করে। তথাপি তারা কর্তব্যনিষ্ঠ থেকে গেট না খুলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সক্ষম হন।

রেলপথ মন্ত্রণালয় জানায়, ওপরের বর্ণিত তিন রেলকর্মী এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের একজন সিকিউরিটি গার্ড নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরবচ্ছিন্ন রেলসেবা নিশ্চিত করতে এবং মারাত্মক দুর্ঘটনার হাত থেকে যাত্রী ও ট্রেনকে রক্ষা করেন। তাঁদের এই সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা বাংলাদেশ রেলওয়ের ইতিহাসে গৌরবময় একটি অধ্যায় হয়ে থাকবে। রেলওয়ের সেবা ও যাত্রী সুরক্ষায় তাঁদের এই অসামান্য অবদানের জন্য তাঁদেরকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

এসময় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button