আপিল বিভাগের রায় পেলে ইশরাকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি
মেয়রের শপথ ঘোষণার বিষয়ে ইসি সাংবিধানিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন

তাজা খবর: বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মেয়র ইস্যুতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, আপিল বিভাগের রায় হাতে পেলেই আমাদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন।
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের রায় ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের শপথ ঘোষণার বিষয়ে ইসি সাংবিধানিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আপিল বিভাগের রায় এখনও পাইনি। রায় পাওয়ার পরে কি ধরনের সিদ্ধান্ত আসে তার আইনগত দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমাদের যা করণীয় তাই করব।
আপনারাদের আইনজীবী সেখানে ছিল? এই প্রসঙ্গে এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, আইনজীবীর সঙ্গে কথা হয়নি।
ইশরাকের ইস্যু নিয়ে দফায় দফায় ইসির আইন শাখার সঙ্গে বৈঠক করেছেন সিইসি। এছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন অন্যান্য কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবদুর রহমানেল মাসুদ, বেগম তহমিদা আহমদ এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকেরা সিইসিকে নানা প্রশ্ন করলে এড়িয়ে যান সিইসি।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ১১টা থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেয় বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থক ও ডিএসসিসির কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি— ট্রাইব্যুনালের রায়ের ভিত্তিতে ইশরাক হোসেনকে দ্রুত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।
এর আগে, গত ১৪ মে থেকে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে শুরু হয় ধারাবাহিক অবস্থান কর্মসূচি। এর ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়ে ডিএসসিসির স্বাভাবিক কার্যক্রম।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। তবে ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ নির্বাচন-পরবর্তী এক রায়ে ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ওই ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে বৈধ মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে তার মেয়র পদে নিয়োগ চূড়ান্ত করে।
তবে শপথ অনুষ্ঠানের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। কারণ, এ নিয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়, যার আবেদনকারী ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ। তিনি ১৪ মে হাইকোর্টে আবেদন করেন, যাতে ইশরাককে শপথ নিতে না দেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট ওই রিট খারিজ করে দিলে ইশরাকের সমর্থকেরা আন্দোলন স্থগিত করেন ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য। তারা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলেন। নির্ধারিত সময় শেষে আবারও শনিবার থেকে আন্দোলনে ফেরেন তারা।