আমাদের অব্যাহতি বেআইনি, চুন্নু এখনো মহাসচিব: আনিসুল
শামীম পাটওয়ারীকে মহাসচিব নিয়োগ সম্পূর্ণ অবৈধ

তাজা খবর: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে বেআইনিভাবে নেতাদের দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অভিযোগ করলেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, এখনো মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ অব্যাহতি পাওয়া নেতাদের দাবি তারা স্বপদে আছেন। আর শামীম পাটওয়ারীকে মহাসচিব নিয়োগ সম্পূর্ণ অবৈধ।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন অব্যাহতি পাওয়া এই নেতা।
সোমবার (৭ জুলাই) আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার এবং মুজিবুল হক চুন্নুকে দল থেকে অব্যাহতি দেন জিএম কাদের। এ ব্যাপারে কথা বলতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অব্যাহতি পাওয়া তিন নেতা।
অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে জিএম কাদের যে প্রেসিডিয়াম বৈঠকের রেফারেন্স দিয়েছেন তাও অস্বীকার করেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, প্রথমত ওই প্রেসিডিয়ামের সভায় কোরাম হয়নি। আর গঠনতন্ত্রের ২০/৩(খ) ধারায় বলা হয়েছে- মহাসচিব চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে, প্রেসিডিয়ামের মিটিং আহ্বান করবেন। আলোচ্যসূচি নির্ধারণ করবেন মহাসচিব। পার্টির চেয়ারম্যান মিটিং ডাকার এখতিয়ার রাখেন না। সম্মেলন ঘোষণার পর পার্টির কোনো পদে পরিবর্তন পরিবর্ধন করতে পারবেন না।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে আমরা গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজ করেছি। আমরা পার্টির বিরুদ্ধে কী কাজ করেছি। আমরা বিবৃতি দিয়ে বলেছি ২০ (ক) ধারা বাতিল করতে বলেছি, হিসাবে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এবং বৃহত্তর ঐক্যের কথা বলেছি। আমাদের এসব কাজ কোনোভাবেই দলের গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজ হিসেবে গণ্য হতে পারে না।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রায় সকলেই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে দলের সঙ্গে রয়েছি। আমিও এই পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলাম, আমাকে যখন ঘোষণা করা হয়, তখন পার্টির চেয়ারম্যান আমার পাশে বসে ঘোষণা দিয়েছিলেন। আর জিএম কাদের জোর করে স্বাক্ষর নিয়েছেন। একজন মৃত্যু পথযাত্রী ছিলেন। ঠিক যেভাবে মিলিটারি ক্যু হয় সেভাবে করা হয়েছে।’
পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং কাউন্সিলের মাধ্যমে সকল সমস্যা সমাধানের দাবি জানান তিনি।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমরা এখনো স্বপদে বহাল রয়েছি, আমাদের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বহাল রয়েছেন। ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর নিয়োগ সম্পূর্ণ অবৈধ। কাউন্সিল ঘোষণার পর কাউকে অব্যাহতি দেওয়া কিংবা প্রমোশন দেওয়া অবৈধ।’
জাপার এই প্রভাবশালী নেতা বলেন, ‘বিগত নির্বাচনে আড়াই কোটি টাকার মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। সেই টাকার কোনো হিসাব দেননি। পার্টির চাঁদা এবং অনুদানের কোনো হিসাব দেননি তিনি। আমরা তার কাছে এসবের হিসাব চেয়েছি। এটাতো গঠনতন্ত্রবিরোধী হতে পারে না।’
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টি ছোট হতে হতে এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে বলে মন্তব্য করেন কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ হলে জাতীয় পার্টি আগামী দিনে অনেক ভালো করতে পারবে। তিনি বলেন, জিএম কাদের একেএকে সবাইকে বের করে দিয়েছেন। আমরা সবাই চাই একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় পার্টি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, এটি ইউ তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, নাসরিন জাহান রত্না, নাজমা আক্তার, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, মো. আরিফুর রহমান খা, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সরদার শাহজাহান, মো. হারুন আর রশিদ, ভাইস-চেয়ারম্যান আমানত হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, যুগ্ম মহাসচিব মো. বেলাল হোসেন, ফখরুল আহসান শাহজাদা, দফতর সম্পাদক এম এ রাজ্জাক খান, যুগ্ম সম্পাদক- শারমিন পারভীন লিজা, ডা. সেলিমা খান, কেন্দ্রীয় নেতা – মিজানুর রহমান দুলাল, আব্দুস সাত্তার, জিয়া উর রহমান বিপুল, তাসলিমা আকবর রুনা, আলমগীর হোসেন, আমিনুল ইসলাম সেলিম, এস এম হাশেম, সিরাজুল আরিফিন মাসুম, চিশতি খায়রুল আবরার শিশির, হানিফ হোসেন বাবু, ফয়সাল সালমান, মিজানুর রহমান প্রমুখ।