সারা বাংলা

আশুলিয়ার বাইপাইল মহাসড়ক যেন মৃত্যুফাদ, প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা

আধাঁ কিলোমিটার লাখো মানুষের নিত্যদিনের ভোগান্তির কারণ

তাজা খবর: শিল্পাঞ্চল ঢাকা জেলার সাভারের আশুলিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হচ্ছে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক। এই মহাসড়ক দিয়ে রাজধানীর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেছে দেশের উত্তর অঞ্চলও। বর্তমানে এই সড়কের বাইপাইল অংশে প্রায় আধাঁ কিলোমিটার লাখো মানুষের নিত্যদিনের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহাসড়কের মাঝে বড় বড় গর্ত, পিচ ঢালাই সরে গিয়ে উঁচু-নিচু অবস্থার কারণে হরহামেশাই উল্টে যাচ্ছে যানবাহন। যার ফলে সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে লাগামহীন যানজট

পোশাকখাতসহ উত্তরবঙ্গ ও স্থানীয়দের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে গত ২৪ ঘন্টায় অন্তত ২টি ট্রাকসহ বেশ কয়েকটি ইজিবাইক ও অটোরিকশা উল্টে যায়। পাশাপাশি অন্তত আরও ২/৩ টি মালবাহি ট্রাক গর্তে আটকে যায়। যার ফলে সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে অবশ্য আটকে যাওয়া ট্রাক গুলো অন্য গাড়ীর সহযোগিতায় সড়ক থেকে সরানো হয়।

মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল অংশে গিয়ে দেখা যায়, এই মহাসড়কের ঢাকা অভিমুখী লেনে একটি কাটা বাঁশ বোঝাই ট্রাক উল্টে আছে। বাঁশ গুলো সড়কে ছড়িয়ে পড়েছে। একটু দূরে ফুটওভার ব্রিজের নেচে আটকে আছে আরও ২টি বালুর ট্রাক। যার ফলে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে যানজট।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার ভোররাতে টাঙ্গাইল থেকে ছেড়ে আসা বাঁশ বোঝাই একটি ট্রাক বাইপাইল ত্রিমোড় এলাকায় উল্টে যায়। এর আগে সোমবার সন্ধ্যা রাতে একই স্থানে আম বোঝাই একটি মিনি ট্রাক উল্টে যায়। যেটি ঠাকুরগাঁও থেকে আম নিয়ে রাজধানীর দিকে যাচ্ছিল। এছাড়ও মঙ্গলবার ভোররাতে ও সোমবার সন্ধ্যা রাতে বাইপাইল ফুটওভার ব্রীজের নিচে দুইটি বালু ভর্তি ট্রাক গর্তে আটকে যায়। এ সময় একটি ট্রাকের এক্সেলেটর ভেঙ্গে যায় বলে জানা যায়। পরে অবশ্য অন্য গাড়ীর সহযোগীতায় ট্রাক দুটি সড়াকের পেশে সরিয়ে ফেলা হয়।

স্থানীয়রা জানান, সড়কের এই সামান্য অংশের কারণে পুরো মহাসড়কের গতি স্থবির হয়ে পড়ছে। যাত্রীদের পাশাপাশি পণ্য পরিবহনেও মারাত্মক বিঘ্ন হচ্ছে। এক কিলোমিটার সড়কে যানজট এখন যেন নিত্যসঙ্গী। ঘন্টার পর ঘন্টা শত শত যানবাহন আটকে থাকে এই অংশে। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রী, পরিবহন শ্রমিক এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।

নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কটি সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের মানিকগঞ্জ বিভাগের অধীনে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকলেও গত বছর থেকেই এই অংশে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ করছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, দুটি ভিন্ন দপ্তরের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণেই এই জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। সওজ যেখানে মহাসড়কের সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে, সেখানে সেতু কর্তৃপক্ষের নির্মাণাধীন প্রকল্পের কারণে সৃষ্ট সমস্যাগুলো সমাধান হচ্ছে না সময়মতো। সবমিলিয়ে দুই দপ্তরের সমন্বয়হীনতার কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বাইপাইল অংশ যেন এখন ‘গলার কাঁটা’।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের মানিকগঞ্জ বিভাগের নয়ারহাট সড়ক উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী দেবাশীষ সাহা বলেন, “মহাসড়কের এই অংশটুকু সেতু কর্তৃপক্ষের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। তাদের কাজ চলার কারণে মাঝে মাঝে সড়কের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। আমরা তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি, যেন দ্রুত সমস্যা সমাধান হয়।”

অন্যদিকে, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিচালক মো: শফিকুল ইসলাম জানান, “আমাদের প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। আমাদের কাজ কিন্তু উপরে, নিচে না। তবু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে রিকুয়েস্ট করে সংস্কার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। আশা করি দ্রুত তারা ব্যবস্থা নিবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button