রাজনীতি

করিডরের আলোচনা ওখানে ফুলস্টপ মারেন, আর এক পাও আগাবেন না- নুরুল হক নুর

আপনাদের প্রতি আমার সমর্থন আছে ভালবাসা আছে

মোঃ শরিফ হাসান নিলয়, সাভার:

বাংলাদেশের কক্সবাজারের ভূমি ব্যবহার করে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তথাকথিত সহায়তা পৌঁছানোর নামে যে মানবিক করিডরের আলোচনা চলছে ওখানে ফুলস্টপ মারেন। আর এক পাও আগাবেন না। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের উপর ঝুকি তৈরী হয় এমন কোন সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসহ কোন সরকারকেই নিতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

বৃহস্পতিবার (০১ মে) সন্ধায় আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার দেওয়ান ইদ্রিস উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, আপনাদের প্রতি আমার সমর্থন আছে ভালবাসা আছে তার মানে এটা নয় আপনারা যা ইচ্ছা তাই করবেন আমরা মেনে নিবো। আমরা একটা কথা বলতে চাই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌম্বের ওপরে ঝুঁকি তৈরি হয় এমন কোন সিদ্ধান্ত অন্তর্বতীকালীন সরকার কিংবা কোন সরকার কে আমরা নিতে দেবো না।

নুর বলেন, রাজনৈতিক দলসমূহকে বলবো নির্বাচন কবে হবে আমরা কিন্তু জানি না। আমরা রাষ্ট্র সংস্কার চাই, ড. ইউনুসের প্রতি আমাদের পরিপূর্ণ ভালবাসা আছে, তবে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমার কাছে সুবিধার মনে হচ্ছে না।

তিনি আরো বলেন, যেই আওয়ামী দুর্বৃত্তরা এতো জঘন্য ইতিহাসের বর্বরতা ও গণহত্যা ঘটালো, এতো মানুষকে পঙ্গু করলো তার পরেও এখন পর্যন্ত তাদেরকে নিষিদ্ধের বিষয়ে আমরা কোন সরকারি সিদ্ধান্ত দোখি নাই। আমরা পরিস্কারভাবে সরকারকে বলতে চাই অনতিবিলম্বে এই গণহত্যাকারী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগ সহ এই গণহত্যার অন্যান্য সহযোগী অঙ্গসংগঠন মাফিয়া লুটেরাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে আহত বা নিহতদের কল্যানে ব্যায় করতে হবে।

সাবেক ভিপি নুর বলেন, কথা সত্য, কোন কোন উপদেষ্টাদের মধ্যে আমরা আপোষগামী মনোভাব লক্ষ্য করছি। তারা ওই প্রশাসনের সাথে মিলে রিফাইন আওয়ামী লীগ নামে একটা আওয়ামী লীগ এখানে আনতে চাচ্ছে। আমরা বলতে চাই আগুন নিয়ে খেলবেন না। আমরা কোন স্বার্থের জন্য রাজনীতি করি না, আন্দোলন করি না। একটা বিষয় পরিস্কার আওয়ামী লীগের প্রশ্নে গণ-অধিকার পরিষদ বিন্দু মাত্র ছাড় দেবে না।

এসময় তিনি বলেন, নির্বাচনের তাল ঠিক নাই। নির্বাচন কবে হবে কেউ জানে না। আমরা সবাই বলছি সংস্কারের পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্য নির্বাচন হবে। কিন্তু আপনাদের বুঝতে হবে, এই দাবি মাঠে কেন আসছে তার পিছনে ঘটনা আছে। কাজেই কেউ কেউ ক্ষমতায় না গিয়েই এখনই যদি মানুষের প্রতি আধিপত্য বিস্তার, চরম নির্যাতন করেন মানুষ কিন্তু ভোটের মাঠে তার জবাব দেবে। ভুলে যাবোন না জনগণ এখন অনেক সচেতন, এই জনতা স্বাধীনচেতা, আগামী রাজনীতিতে আপনারা দেখবেন কিভাবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়।

নুরুল হক বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে আমাদের মধ্যে যে জাতীয় ঔক্য এবং সংহতি তৈরি হয়েছে, এই জাতীয় ঔক্য এবং সংহতি বিনষ্ট হলে ওই ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব ঝুঁকিতে পরবে, আবার এই এইখানে ভারতীয় তাবেদার শ্রেণী তৈরি হবে। গণ-অধিকার পরিষদের এই গণঅভ্যুত্থানে অবদান কি, তা আপনারা জানেন। কিন্তু দুঃখ লাগে কষ্ট হয়, উদ্বিগ্ন হই। এখনই যখন মাঝে মাঝে শুনি গণ-অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সাথে কোথাও কোথাও ঝামেলা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গণঅধিকার পরিষদ ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যেভাবে আপোষহীনভাবে লড়াই সংগ্রাম করেছে আগামীতেও দেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব গণতন্ত্রের জন্য সুষ্ঠুধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় আপোষহীনভাবে লড়াই সংগ্রাম করবে। জাতীয় ঔক্য এবং সংহতি প্রতিষ্ঠায় সকল দলকে নিয়ে একসাথে চলবে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিও সেই আহবান জানাই।।

বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে শ্রমিক সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ শওকত হোসেন ফরহাদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো: রাশেদ খানসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানার শ্রমিকরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button