অপরাধ ও দুর্নীতি

ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের অভিযান

কলেজে অবস্থান করে সংশ্লিষ্ট সবার জবানবন্দি গ্রহণ এবং নথিপত্র সংগ্রহ

তাজা খবর: ঢাকা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের কন্টিনজেন্সি (আকস্মিক) বাজেটের অর্থ আত্মসাৎ ও প্রশিক্ষণরত শিক্ষকদের নিম্নমানের খাবার প্রদানের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (১৩ জুলাই) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে তিন ঘণ্টাব্যাপী কলেজে অবস্থান করে সংশ্লিষ্ট সবার জবানবন্দি গ্রহণ এবং নথিপত্র সংগ্রহ করেছে বলে জানিয়েছেন দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম। অভিযোগ ছিল কলেজটির অধ্যক্ষের বিরুদ্ধেও

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে লেইস প্রজেক্টের স্টাডি ট্যুরে কক্সবাজার ভ্রমণ না করেই অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে। এছাড়া কলেজের বিভিন্ন প্রকার প্রকল্পের ট্রেনিং কোর্সে ফুডিংয়ের নামে খাবার সরবরাহে বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাট হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ট্রেনিং সেশনে নিজে রিসার্চ পারসনের নামে সম্মানি নেওয়া, পরিবহন এবং নানা প্রকার অভ্যন্তরীণ কমিটির বরাদ্দকৃত টাকা ও ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয় টানা ৩ বছর কুমিল্লা টিচার্স ট্রেনিংয়ে অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকাকালে অধ্যক্ষ রিজিয়া সুলতানা হোস্টেলে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ৪টি রুমের ১২টি সিট দখল করে বসবাস করছেন।

অভিযানের বিষয়ে দুদক কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযান টিম সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র যাচাই করা হয় এবং শিক্ষক, কর্মচারীসহ অন্যান্যদের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। প্রাপ্ত তথ্যাবলি পূর্ণাঙ্গরূপে পর্যালোচনা করে অভিযান টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে। অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে তার ভিত্তি করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে দুদকের অভিযান ও অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ রিজিয়া সুলতানা বলেন, অভিযোগগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট। আমার মান-সম্মান নষ্ট করার জন্য এসব অভিযোগ করা হচ্ছে। দুদকের অভিযান টিমের কাছে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র সরবরাহ করেছি।

গড়াই নদী ড্রেজিং প্রকল্পে অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে

২০২৪ – ২০২৫ অর্থ বছরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব ড্রেজার দিয়ে কুষ্টিয়ায় গড়াই নদী ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে। ‘গড়াই নদী ড্রেজিং ও তীর সংরক্ষণ (২য় সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত ড্রেজার ও সহযোগী জলযান পরিচালনায় জ্বালানি তেল চুরি করে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।

অভিযোগ রয়েছে, নদী ড্রেজিং কাজে নিয়োজিত ড্রেজার বাঙ্গালীর জন্য প্রতিদিন ৬৮ লিটারা জ্বালানি তেল বরাদ্দ দেওয়া হয়; তার মধ্যে ২৪ লিটার জ্বালানি তেল অবৈধভাবে বিক্রয় করা হচ্ছে। একইভাবে ড্রেজার তুরাগের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ৪৫ লিটার; তার মধ্যে বিক্রয় করা হয় ১৩ লিটার, পদ্মার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ৪০ লিটার; তার মধ্যে বিক্রয় করা হয় ১০ লিটার, গড়াই’র জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ২৬ লিটার; তার মধ্যে বিক্রয় করা হয় ১১ লিটার, বিশখালী’র জন্য বরাদ্দ দেওয়ার হয় ২০ লিটার; তার মধ্যে বিক্রয় করা হয় ৯ লিটার এবং জলঢাকা’র জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৬ লিটার; তার মধ্যে বিক্রয় করা হয় ৪ লিটার। এভাবে প্রতিনিয়ত সরকারি জ্বালানি তেল অবৈধভাবে বিক্রয় করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে বলে সম্প্রতি দুদকের কাছে অভিযোগ আসে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button